নায়িকা হওয়ার জন্য-6

দেখতে দেখতে সন্ধে উত্তীর্ণ হোল। তখনও রুদ্রর দেখা নেই। রিয়া সেই থেকে ছটফট করছে। ওর মাথার ভেতরে সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। বারে বারে রুদ্রকে মোবাইলে ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু রুদ্র মোবাইল অফ করে রেখে দিয়েছে সেই সকাল থেকেই। রিয়ার মনের ভেতরে যে কি মানসিক যন্ত্রণা শুরু হয়েছে রিয়া বুঝতে পারছে হাড়ে হাড়েই। একি হোল? লোকটা এমন ভাবে প্রতারণা করল রিয়ার সাথে। কোথায় হিরো? কোথায় ডিরেক্টর? কেউ কোথাও নেই। শুধু বিশাল স্যুটটাতে রিয়একা পায়চারী করছে এক প্রতারিত নায়িকার মতন। কে যেন ওর কানে কানে বারবার বলে দিচ্ছে-তোমার সাথে ষড়যন্ত্র হয়েছে রিয়া। তুমি কি ভুল করেছ রিয়া তুমি নিজেই জানো না। এমন লোভে পড়ে অনায়াসে শরীর বিলোনোর কাজটা তুমি কেন করলে? একবারও কি যাচাই করতে পারলে না লোকটাকে? শেষ পরযন্ত প্রোডিউসার রূপী রুদ্রকে বিশ্বাস করে তুমি এমন চরন ঠকান ঠকলে? এরপরে কাউকে মুখ দেখাতে পারবে তুমি? রিয়া তুমি কি করলে?
দুটো হাত দিয়ে মুখ দুটো চেপে ধরে ধপাস করে সোফার উপর বসে পড়ল। মুখ ঢেকে হাউহাউ করে কাঁদতে লাগল রিয়া। বুঝল ওর যা সর্বনাশ হওয়ার হয়ে গেছে। এখন এই কলঙ্ক থেকে নিস্তার পাওয়ার আর কোন আশা নেই। রুদ্র লোকটা আসলে কোন প্রোডিউসার নয়। মুখোস পড়ে ওর শরীরটাকে যতটুকু ভোগ করার করে নিয়েছে। এখন এই কলঙ্কের বোঝা বয়েই ওকে সারাজীবন কাটাতে হবে।
রাত দশটার সময় একটা ট্যাক্সী ধরে কোনরকমে বাড়ী ফিরল রিয়া। ওর ব্যাগে একশটা টাকা ছিল ভাগ্যিস। হোটেল ছেড়ে বেরোনোর সময় রিসেপসনে কিছু পেমেন্ট করতে হয়নি। রুদ্র বিলটা পেমেন্টটা আগেই করে গেছে বলে বাঁচোয়া। নইলে বিলের বোঝা রিয়ার ঘাড়ে চাপত। রিয়ার তখন মরা ছাড়া আর কোন গতি থাকত না। বারবার ওর নিজের উপরই ঘেন্না করছিল। নায়িকা হওয়ার সাধ পুর্ণ করতে গিয়ে এমন ভুল কাজটা করল, তার জন্য নিজেকে কোনদিন ক্ষমা করতে পারবে না সারা জীবনে। ঘরে এসে কাউকে ব্যাপারটা কিছু না জানিয়ে পাথরের মতন চুপচাপ বসে রইল। বুঝল জীবনে ওর আর নায়িকা হওয়া সত্যি হোল না। সারাজীবনের মতন একটা আফসোস থেকেই গেল। আবার মডেলিং প্রফেশনেই ফিরে যাবে বলে নিজেকে মনস্থ করল

এই ঘটনার ঠিক পনেরো দিন পর।
দুপুর বেলা রিয়া তখন ঘরেই। মোবাইলে অজানা নম্বর থেকে একটা ফোন এলো। রিয়া হ্যালো বলার সাথে সাথেই বুঝতে পারলো প্রান্তে গলাটা রুদ্রর। রাগে ফেটে পড়ল ও। ফোনে প্রচন্ড গালিগালাজ করতে শুরু করল রুদ্রকে। রুদ্র এবার ওকে থামিয়ে মিষ্টি গলায় রসিয়ে রসিয়ে বলতে লাগল। রিয়া অবাক হয়ে শুনতে লাগল রুদ্রর কথা।
মাই ডারলিং রিয়া,
তোমাকে ফাঁদে ফেলেছিলাম বলে তোমার নিশ্চই আফসোস হচ্ছে এখন।
খেলাটা এভাবে ট্রিক্ করে যাবে আমিও ভাবিনি রিয়া।
যাই বল তোমাকে কিন্তু লুঠ করেছি তোমারই স্বইচ্ছায়।
এমন মজার খেলা খেলতে খেলতে পুর্ণ দৈর্ঘের একটা ব্লু ফিল্ম বানিয়ে নিতে পারব আমিও ভাবিনি।
এমন সুন্দরী তুমি।
ভরাট লোভজাগানো তোমার শরীর।
জানতাম তোমাকে ব্লুফিল্ম এর হিরোয়িন বানানোর প্রস্তাব দিলে তুমি হয়তো আমার মুখে থুতু দিতে।
নইলে সপাটে গালে একটা চড় মারতে।
উপায় না দেখে এমন খেলাটাই খেলতে হোল তোমার সাথে।
তুমি এত বিউটিফুল।
তোমাকে উপভোগ করতে করতে এমন একটা ছবি বানিয়ে ফেললাম রিয়া তুমি টেরই পেলে না।
ক্যামেরাটা আগে থেকেই ঘরে ফিট করা ছিল। তুমি টের পাওনি।
রিয়া আমি যদি চাইতাম, তোমাকে রেপ করতে পারতাম।
তোমাকে অজ্ঞান করে সেক্সুয়ালী অ্যাবিউস করতে পারতাম।
কিন্ত সে উদ্দেশ্য তো আমার ছিল না।
তুমি যখন তোমার শরীরটাকে আমায় ইচ্ছেমতন এনজয় করতে দিলে আমি তোমার অজান্তেই ডিজিটল ক্যামেরায় একটা লম্বা ফিল্ম বানিয়ে ফেললাম।
কি সুন্দর জীবন্ত নায়িকার মতন রোল প্লে করলে তুমি
নানা ভঙ্গীতে সেক্সুয়াল ইনটারকোর্স করার ছবি।
সত্যি রিয়া শুধুমাত্র তুমি বলেই সম্ভব হোল।
পর্ণো ফিল্মটা এখন হটকেকের মতন্ বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
রিয়া তুমি বুদ্ধিমতি।
নিশ্চই বুঝতে পেরেছ কেন এটা আমি করেছি।
নীলছবির সওদাগরকে যে তুমি চিনতে পেরেছ, তাতেই আমি খুশী।
আমি একজন ব্লু ফিল্ম নির্মাতা আর সেই ছবি সারা ভারতে এমনকি বিদেশেও ডিস্ট্রীবিউট করে বেড়াই।
তবে খুব কস্টলি ব্লু ফিল্ম বানাই।
তাই দামী দামী হোটেল ভাড়া করি সুন্দর পায়রাকে জাল পেতে ধরার জন্য।
তুমি কাউকে ঘটনা না বললে তোমার কোন ক্ষতি নেই।
বরঞ্চ বললেই তুমি কাউকে আর মুখ দেখাতে পারবে না।
যে পোজগুলোকে তুমি একটার পর একটা দিয়েছ। তোমার চরিত্রকে কেউ তখন বিশ্বাস করবে না।

রিয়া ভালো থেকো।
আর তোমার নীলছবির নায়ককে মাঝে মাঝে স্মরণ কোরো।
ছবিটা দেখে নিও। সিডিটা তোমাকে কোরিয়রে পাঠিয়েছি।
আর হ্যাঁ। পুলিশে খবর দিও না।
কারন কোন প্রমান তুমি দিতে পারবে না।
ছবিতে আমার মুখটাকে কম্পুটারে চেঞ্জ করে আরেকজনের মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আসল ভোগটা যখন করেই নিয়েছি। তখন মুখ আর রেখে লাভ কি?
তাই মন খারাপ না করে ব্লু ফিল্মটাকে এনজয় করো।
আমার ছবিতে তুমি যে সত্যি দারুন অভিনয় করেছ সেটা এবার নিজের চোখেই দেখে নাও।

রুদ্র দুম করে লাইনটা কেটে দিল। রিয়া ওকে আবার ধরার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না। গুম হয়ে ঘরে চুপচাপ বসে রইল

দুদিন পরেই একটা ছোট পার্সেল এল কোরিয়ারের মাধ্যমে। স্পিডপোষ্ট এর খামটা যত্ন সহকারে খুলল। দেখল ভেতরে একটা সিডি। প্রেরকের নাম টা অজানা। পাঠিয়েছে রিয়াকে উদ্দেশ্য করে। রিয়া সিডিটা প্লেয়ারে চালিয়ে যতই দেখতে লাগল ওর চোয়াল দুটো ততই শক্ত হতে লাগল আসতে আসতে। যে ওদিনকারই ছবি। সব এক একটা করে ঘটছে হোটেলের স্যুটে। শুরু থেকে শেষ। ছবির নাম ‘‘এই না হলে সেক্স?’’